তিনি ছিলেন একজন প্রেমময় স্বামী আর দায়িত্বশীলপিতা।সন্তানদের ব্যাপারে আব্বুকে কখনও দেখিনি কারো ব্যাপারে একটু বেশী পক্ষপাতিত্ব করেছেন। তিন সন্তানকে সব সময় সমান চোখে দেখেছেন। যখনই কোন ছবি বিক্রি হতো আব্বু বিক্রির টাকার কিছু অংশ আমাদের তিন ভাই বোন এবং সেই সাথে আম্মাকে সমান ভাগ করে দিতেন। কোন সিরিজ যখন আঁকতেন, সেখান থেকেও আমাদের তিন ভাই-বোনকে পছন্দ করে ছবি বেছে নিতে বলতেন। আমি চট্টগ্রামে থাকি। ঢাকায় গেলে বলতেন, “যুথী, তুই এখান থেকে তোর যেটা ভাল লাগে বেছে নে। যুঁই আর যামী কেও দিয়েছি।”আব্বুর ট্রান্সপারেন্সী নিয়ে খুব ছোট একটা ঘটনাবলি ।আব্বুর দুইটা গাড়ী।দিদি তখন বিলিয়াতে চাকরি করছে, আব্বুর গাড়ী আনা নেয়া করে। আব্বু একদিন আমাকে ফোন দিলেন, বললেন, আমার তো দুইটা গাড়ী, একটা যদি যুঁইয়ের নামে করে দেই,তোর কোন আপত্তি আছে?
তোর আম্মাও বলেছে করে দিতে। তুই কি বলিস? যামীরও আপত্তি নেই। আমি বললাম, আপনার গাড়ী আপনি দিবেন, আমাদের কাছ থেকে কেন জিজ্ঞেস করছেন, আব্বু? তিনি বললেন, তোদের সবার মতামত তো নিতে হয়। এইতো করোনার সময়ে, আব্বু ফোন দিয়ে বললেন, তোর জন্য একটা পিপিই কিনে পাঠাবো? সুজাত( বড় বোনের হাজব্যান্ড, আব্বু মারা যাওয়ার ২৮ দিন পর উনিও করোনায় ইন্তেকাল করেছেন), যুঁই আর কুট্টুকে কিনে দিয়েছি। তোদের জন্যও পাঠাই? আমি বললাম, না, না আব্বু লাগবে না, করোনাতে কুরিয়ার করার দরকার নেই।এই হলেন তিনি “শিল্পী মুর্তজা বশীর” – আমাদের বাবা।