পর্ব ১
————————-
“দাড়াঁন, সাক্ষাৎকারের সময় সকাল ১০ টা থেকে ১১টা, বিকাল ৪ টা থেকে ৫টা” .লেখাটা পড়লে মনে
হবে কোন ডাক্তারের চেম্বারে রোগী দেখার
সময়সূচি। আসলে তা না, আমাদের চট্টেশ্বরী রোডের এনেসেল ম্যানসনের ফ্ল্যাট নং ৫ এ আব্বুর রুমের দরজায়
এই কথাটিই লেখা ছিল।
আমাদের ছেলেবেলা কেটেছে চট্টেশ্বরী রোডের এনেসেল ম্যানসনে।বিশাল বড় ড্রইং-ডাইনিং এর এক পাশে ছিল
আব্বুর স্টুডিও।ছোট, বড়,মাঝারী নানা সাইজের
ক্যানভাস আর রংতুলিতে ঠাসা ছিল স্টুডিওটা।
আব্বু কিন্তু সারাবছর ছবি আঁকতেন না।কিন্তু যখন শুরু করতেন এক নাগারে একেঁই যেতেন, বিরামহীন ভাবে, অক্লান্ত ভাবে। আব্বু ছবি এঁকে প্রথমে আম্মাকে দেখাতেন, আম্মার মতামত নিতেন। আম্মার পেইন্টিং এর উপর কোনো
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না, কিন্তু অনেক সময় দেখা গিয়েছে আব্বু আঁকা ছবির রং কম্বিনেশন
কিংবা প্যাটার্ণ বদলে ফেলেছেন শুধুমাত্র আম্মার পছন্দকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে।
ছেলেবেলায় প্রচন্ড ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আব্বুকে আমার মাঝে মাঝে দুর্বোধ্য মনে হতো। আব্বু আমাদের তিন ভাই বোনকে কখনও শাসন
করেন নি। তিনি নিজেও স্বাধীনচেতা ছিলেন, আমাদেরকেও
স্বাধীনচেতা করে গড়ে তুলেছেন। বলতেন, মাথা নত করলে আল্লাহর কাছে করো,
মানুষের কাছে নয়। যা চাওয়ার এক আল্লাহর কাছে চাও, যা দেয়ার
তিনিই দিবেন, অন্য কারো দেয়ার ক্ষমতা নেই।